আপনার কার্ট

  • আপনার কার্ট খালি!
৳১০,০০০-এর বেশি অর্ডারে ফ্রি শিপিং!
Premature Ejaculation: What is it?
Beshi Khushi Last Update: সেপ্ট 30, 2025 912

বাংলাদেশের প্রিম্যাচিউর ইজাকুলেশন (PE): উপসর্গ, কারণ, নির্ণয় ও চিকিৎসা

প্রিম্যাচিউর ইজাকুলেশন (PE) বা দ্রুত বীর্যপাত/আগাম স্খলন বাংলাদেশের পুরুষদের মধ্যে অন্যতম সাধারণ যৌনস্বাস্থ্য সমস্যা। এটি ঘটে যখন একজন পুরুষ তার বা তার সঙ্গীর প্রত্যাশার আগেই বীর্যপাত করে, ফলে দু’পক্ষেই অসন্তোষ থেকে যায়। আন্তর্জাতিক যৌনচিকিৎসা সংস্থার মতে, PE চিহ্নিত হয়— প্রবেশের পর খুব অল্প সময়ে বীর্যপাত, বীর্যপাত নিয়ন্ত্রণে অক্ষমতা, এবং এর ফলে মানসিক চাপ বা সম্পর্কের সমস্যার সৃষ্টি।

দেশে তরুণদের দৈনন্দিন মানসিক চাপ ও বয়স্কদের ডায়াবেটিস/উচ্চ রক্তচাপের মতো শারীরিক কারণে PE দেখা যায়। অনেকে একে “স্বাভাবিক” ভেবে এড়িয়ে যান, কিন্তু চিকিৎসা না করলে হতাশা, আত্মবিশ্বাস কমে যাওয়া ও সম্পর্কের টানাপোড়েন বাড়তে পারে।

প্রিম্যাচিউর ইজাকুলেশন কী?

প্রিম্যাচিউর ইজাকুলেশন ঘটে যখন বীর্যপাত অস্বাভাবিকভাবে দ্রুত হয়— সাধারণত প্রবেশের এক মিনিটের মধ্যে বা পুরুষ প্রস্তুত হওয়ার আগেই। বাংলাদেশে একে সাধারণত “দ্রুত বীর্যপাত” বা “আগাম স্খলন” বলা হয়।

চিকিৎসকরা PE দুই ভাগে ভাগ করেন:

  • আজীবন (Lifelong PE): প্রথম যৌন অভিজ্ঞতা থেকেই উপস্থিত।
  • অর্জিত (Acquired PE): আগে স্বাভাবিক ছিল, পরে স্বাস্থ্য সমস্যা/চাপ/সম্পর্কজনিত কারণে তৈরি হয়।

গবেষণা বলছে, বিশ্বব্যাপী প্রতি তিনজন পুরুষের একজন জীবনের কোনো পর্যায়ে PE-তে ভোগেন। বাংলাদেশেও প্রবণতা কাছাকাছি; তবে লজ্জা ও সামাজিক কলঙ্কের কারণে অনেকে চিকিৎসা নেন না। সঠিক চিকিৎসায় এটি নিয়ন্ত্রণযোগ্য।

প্রিম্যাচিউর ইজাকুলেশনের উপসর্গ

অনেকেই সামাজিক কারণে বিষয়টি খুলে বলেন না, তবু লক্ষণগুলো বেশ স্পষ্ট।

প্রধান উপসর্গ:

  • খুব তাড়াতাড়ি বীর্যপাত: প্রবেশের ১–২ মিনিটের মধ্যে বা কখনও প্রবেশের আগেই।
  • নিয়ন্ত্রণের অভাব: দীর্ঘসময় স্থায়ী হতে চাইলেও পারা যায় না।
  • হতাশা/উদ্বেগ: লজ্জা, আত্মবিশ্বাস কমে যাওয়া বা যৌন আগ্রহ নেমে যাওয়া।

মাঝে মাঝে দ্রুত বীর্যপাত স্বাভাবিক; কিন্তু বারবার হলে এবং মানসিক চাপ তৈরি করলে সেটিই PE।

প্রিম্যাচিউর ইজাকুলেশনের কারণ

PE একক কারণে নয়— শারীরিক, মানসিক ও জীবনযাপনের মিলিত প্রভাবে হয়। বাংলাদেশে কিছু ভ্রান্ত ধারণা (যেমন কম যৌনসম্পর্ক বা “ভুল কৌশল”) প্রচলিত হলেও এর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।

শারীরিক কারণ

যে বিষয়গুলো ঝুঁকি বাড়ায়:

  • হরমোনের ভারসাম্যহীনতা: টেস্টোস্টেরন, প্রোল্যাক্টিন, থাইরয়েড।
  • সেরোটোনিন কম থাকা
  • প্রোস্টেট/মূত্রনালীর প্রদাহ বা সংক্রমণ
  • লিঙ্গে অতিরিক্ত সংবেদনশীলতা

মানসিক কারণ

মানসিক স্বাস্থ্যের প্রভাব বড়:

  • কাজ/অর্থ/পরিবারের চাপ
  • পারফরম্যান্স উদ্বেগ (“দীর্ঘস্থায়ী হতে না পারার” ভয়)
  • ডিপ্রেশন বা খারাপ মুড
  • আত্মবিশ্বাসের অভাব, নেতিবাচক অভিজ্ঞতা
  • সম্পর্কের টানাপোড়েন/দ্বন্দ্ব

⚠️ বাংলাদেশের প্রসঙ্গ: অনেকেই একে “মানসিক দুর্বলতা” ভাবেন; বাস্তবে শারীরিক ও মানসিক— দু’দিকই জড়িত থাকতে পারে। সঠিক কারণ জানতে ডাক্তারি পরামর্শই নিরাপদ।

বাংলাদেশে PE-এর ঝুঁকির কারণ

দেশীয় প্রেক্ষিতে যেগুলো ঝুঁকি বাড়ায়:

  • হরমোনের সমস্যা: লো টেস্টোস্টেরন/থাইরয়েড।
  • মানসিক চাপ/উদ্বেগ/ডিপ্রেশন
  • ইরেকটাইল ডিসফাংশন (ED): দ্রুত শেষ করার প্রবণতা তৈরি হয়।
  • দীর্ঘমেয়াদী অসুখ: ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা।
  • সম্পর্কের টানাপোড়েন

টিপস: একাধিক কারণ একসঙ্গে থাকতে পারে— আগেভাগে চিহ্নিত করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

প্রিম্যাচিউর ইজাকুলেশন নির্ণয়

ডাক্তার সাধারণত দেখেন: খুব দ্রুত বীর্যপাত, নিয়ন্ত্রণের অভাব এবং এতে মানসিক চাপ/সম্পর্কের সমস্যা হচ্ছে কি না। এ লক্ষণগুলো যদি অন্তত ৬ মাস নিয়মিত থাকে এবং অন্য কোনো কারণে ব্যাখ্যা করা না যায়— তাহলে PE ধরা হয়।

যখন এটি PE নয়

  • দীর্ঘ বিরতির পর উত্তেজনা বেশি হলে দ্রুত শেষ হতে পারে।
  • অনেকে “তাড়াতাড়ি শেষ” মনে করলেও সময় স্বাভাবিক সীমায় থাকে।

তাই আত্ম-অনুমানের চেয়ে চিকিৎসাগত মূল্যায়ন জরুরি।

বাংলাদেশে নির্ণয় কীভাবে

চিকিৎসক জানতে পারেন:

  • কতদিন ধরে উপসর্গ
  • গড় সময় (latency) কত
  • কতবার খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়
  • অন্যান্য অসুখ/ওষুধ আছে কি না

দেশে অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ গোপনীয়তা বজায় রাখেন— খোলামেলা বললে সঠিক সমাধান মেলে।

প্রিম্যাচিউর ইজাকুলেশনের চিকিৎসা

বাংলাদেশে চিকিৎসা হিসেবে ওষুধ, স্প্রে/ক্রিম, আচরণগত কৌশল ও কাউন্সেলিং ব্যবহৃত হয়; আজীবন নাকি অর্জিত— এবং শারীরিক/মানসিক কোন্‌ দিকটি বেশি— তার ওপর পরিকল্পনা নির্ভর করে।

ওষুধ

  • SSRI অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট: সারট্রালিন, প্যারোক্সেটিন, ফ্লুক্সেটিন, এসসিট্যালোপ্রাম— সেরোটোনিনে প্রভাব ফেলে বীর্যপাত দেরি করে (প্রেসক্রিপশন লাগে)।
  • ED ওষুধ (PDE5 inhibitors): সিলডেনাফিল (Viagra®), টাডালাফিল (Cialis®), ভারডেনাফিল, আভানাফিল— ইরেকশন ভালো রেখে “রাশ” কমায়; PE+ED একসঙ্গে থাকলে উপকারী।
  • লোকাল অ্যানেসথেটিক: লিডোকেইন/বেঞ্জোকেইন স্প্রে/ক্রিম/ওয়াইপ— সংবেদনশীলতা কমায়; দেশে অনেকটাই OTC।

⚠️ সতর্কতা: OTC হলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নিন— সঠিক ব্যবহার ও ডোজ গুরুত্বপূর্ণ।

আচরণগত কৌশল

  • স্টপ–স্টার্ট: চূড়ার আগে থেমে urges কমলে আবার শুরু।
  • স্কুইজ টেকনিক: মাথা–শ্যাফট সংযোগস্থলে হালকা চাপ।
  • কেগেল ব্যায়াম: পেলভিক ফ্লোর শক্তিশালী করে নিয়ন্ত্রণ বাড়ায়।

কাউন্সেলিং ও থেরাপি

পারফরম্যান্স উদ্বেগ, চাপ বা সম্পর্কজনিত বিষয় থাকলে সেক্স থেরাপি/কাউন্সেলিং খুব কার্যকর— আত্মবিশ্বাস ও যোগাযোগ দুই-ই বাড়ে।

বটম লাইন

PE সাধারণ হলেও স্থায়ী নয়। সঠিক ওষুধ, কৌশল ও পরামর্শে অধিকাংশ পুরুষই নিয়ন্ত্রণ ফিরে পান— আত্মবিশ্বাস ও দাম্পত্য সুখও বাড়ে।

প্রতিরোধের উপায়

শতভাগ প্রতিরোধ সম্ভব না হলেও জীবনযাত্রা বদলালে ঝুঁকি ও উপসর্গ কমে। দেশে স্ট্রেস, ডায়াবেটিস ও অলসতা বাড়ছে— তাই প্র্যাকটিক্যাল পদক্ষেপ জরুরি।

  • নিয়মিত ব্যায়াম: হাঁটা/সাইক্লিংও কার্যকর।
  • মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন: ঘুম, মাইন্ডফুলনেস, প্রয়োজনে কাউন্সেলিং।
  • মাস্টারবেশন “রাউন্ড–টু”: অনেকের ক্ষেত্রে কয়েক ঘণ্টা আগে করলে নিয়ন্ত্রণ বাড়ে।
  • PE কনডম: হালকা অ্যানেসথেটিকসহ কনডম ফার্মেসিতে পাওয়া যায়।
  • সঙ্গীর সঙ্গে কথা: খোলামেলা আলাপ চাপ কমায়; ফোরপ্লে বাড়ালে সময় বাড়ে।

⚠️ সতর্কতা (বাংলাদেশ): অনিয়ন্ত্রিত অনলাইন “কুইক ফিক্স” ঝুঁকিপূর্ণ— বিশ্বস্ত ফার্মেসি ও চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

 

প্রিম্যাচিউর ইজাকুলেশন (PE): সাধারণ প্রশ্নোত্তর

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে বেশি জিজ্ঞাসিত প্রশ্নগুলোর সংক্ষিপ্ত, চিকিৎসক-সমর্থিত উত্তর।

শারীরিক (হরমোন/সংবেদনশীলতা/প্রদাহ) ও মানসিক (চাপ, উদ্বেগ, সম্পর্ক)— দুই দিকেই কারণ থাকে। অনেক ক্ষেত্রে একাধিক কারণ একসঙ্গে কাজ করে।
বিশ্ব প্রবণতার মতোই— জীবনের কোনো না কোনো সময়ে বহু পুরুষ এ সমস্যায় পড়েন। লজ্জা/কলঙ্কের ভয়ে রিপোর্টিং কম হয়।
উপসর্গ যদি বেশিরভাগ সময় থাকে, ৬ মাসের বেশি স্থায়ী হয় এবং আত্মবিশ্বাস/সম্পর্কে প্রভাব ফেলে— ইউরোলজিস্ট/সেক্সোলজিস্ট দেখান; গোপনীয়তা থাকে।
SSRI, PDE5 ইনহিবিটর, লোকাল অ্যানেসথেটিক স্প্রে/ক্রিম; সঙ্গে স্টপ–স্টার্ট/স্কুইজ টেকনিক, কেগেল ব্যায়াম ও কাউন্সেলিং। সঠিক পরিকল্পনায় বেশিরভাগেরই উন্নতি হয়।
নিয়মিত ব্যায়াম, স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট, ভালো ঘুম, ধূমপান/অ্যালকোহল এড়িয়ে চলা ও PE কনডম— উপসর্গ কমাতে সহায়ক। ঘনঘন হলে ডাক্তারি পরামর্শ নিন।
অনেক সময় ED থাকলে দ্রুত শেষ করার প্রবণতা বাড়ে, ফলে PE দেখা দেয়। দুই অবস্থাই একসঙ্গে ম্যানেজ করলে ফল ভালো হয়।
সরাসরি নয়। তবে প্রবেশের আগেই/খুব তাড়াতাড়ি বীর্যপাত হলে গর্ভধারণের সম্ভাবনা কমতে পারে। প্রয়োজনে উর্বরতা/EDসহ অন্যান্য কারণও পরীক্ষা করানো উচিত।

Your experience on this site will be improved by allowing cookies.